ম্যালেরিয়াবাহী এনোফিলিস মশা |
ম্যালেরিয়া কী?
· ম্যালেরিয়া এক প্রকার সংক্রামক রোগ যা বিশেষ ধরণের জ্বরের মাধ্যমে প্রকাশ পায়
·
ম্যালেরিয়া এক প্রকার প্লাজমোডিয়াম নামক পরজীবী দ্বারা সংঘটিত রোগ
·
ম্যালেরিয়া এনোফিলিসজাতীয় স্ত্রীমশা বাহিত রোগ
ম্যালেরিয়ার পরজীবীর নাম কী?
ম্যালেরিয়ার পরজীবীর নাম প্লাজমোডিয়াম।
সংক্রামক রোগ বলতে কী বোঝায়?
একজন মানুষ থেকে অন্য মানুষের দেহে কোন রোগ ছড়ালে তাকে সংক্রামক রোগ বলে।
পরজীবী বলতে কী বোঝায়?
যখন জীবাণু অন্য প্রাণীর দেহে বসবাস করে, বংশ বৃদ্ধি করে এবং বেঁচে থাকে, তখন তাকে পরজীবী বলে।
ম্যালেরিয়ার কারণ কী?
·
প্লাজমোডিয়াম জাতীয় পরজীবী।
·
এনোফিলিস জাতীয় স্ত্রীমশা।
·
স্থির বা জলাশয় ও পরিবেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়সমূহ।
কোন কোন ধরনের প্লাজমোডিয়াম পরজীবী দিয়ে ম্যালেরিয়ার হয়?
1.
প্লাজমোডিয়াম ফেলসিপেরাম
(Pf = পি.এফ)
2.
প্লাজমোডিয়াম ভাইভেক্স
(Pv = পি.ভি)
3.
প্লাজমোডিয়াম ম্যালেরি
(Pm = পি.এম)
4.
প্লাজমোডিয়াম ওভালি
(Po = পি.ও)
বাংলাদেশে সাধারণত কোন কোন প্লাজমোডিয়াম পরজীবীর সংক্রমণে ম্যালেরিয়া হয়?
বাংলাদেশে মুলত প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম এবং প্লাজমোডিয়াম ভাইভেক্স দ্বারা ম্যালেরিয়া হয়ে থাকে। এ দুটির মধ্যে প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম পরজীবীর অধিকাংশ ম্যালেরিয়ার জন্য দায়ী।
বাংলাদেশে সাধারণত কোন প্লাজমোডিয়াম জীবাণু দিয়ে মারাত্মক ম্যালেরিয়া হয়ে থাকে?
বাংলাদেশে সাধারণত প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম পরজীবীর দ্বারা মারাত্মক ম্যালেরিয়া হয়ে থাকে।
কোন মশা মানুষকে কামড়ায় এবং ম্যালেরিয়া ছড়ায়?
এনোফিলিস জাতীয় স্ত্রীমশা মানুষকে কামড়ায় এবং ম্যালেরিয়া ছড়ায়। পুরুষ এনোফিলিস মশা সাধারণত মানুষকে কামড়ায় না।
স্ত্রী এনোফিলিস মশা কেন মানুষকে কামড়ায়?
মশার ডিম পরিপক্ক করে তোলার জন্য মানুষের রক্তের প্রয়োজন হয় । তাই যখন ডিম ছাড়ার সময় হয় তখন মশা মানুষকে কামড়ায় এবং রক্ত দ্বারা ডিম পরিপক্ক করে।
ম্যালেরিয়া মশা (ম্যালেরিয়ার বাহক) কোন স্থানে ডিম ছাড়ে?
এই মশা স্থির বা ধীরগতি সম্পন্ন পানিতে ডিম ছাড়ে। এই পানি সাধারণত পরিস্কার হয়।
মশা কীভাবে ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায় বা বিস্তার করে?
পূ্র্বের আলোচনা থেকে জেনেছি যে, কোন মশা ম্যালেরিয়া ছড়ায় এবং কোন পরজীবীর ম্যালেরিয়া সৃষ্টি করে।
·
যখন একটি ম্যালেরিয়া রোগিকে মশা কামড় দেয় তখন রোগির রক্তের সাথে পরজীবীর মশার পাকস্থলীতে/পেটে চলে যায়।
·
পরবর্তী সময়ে ঐ মশা যখন সুস্থ মানুষের শরীরে কামড় দেয় তখন মশার লালাগ্রন্থী থেকে ঐ পরজীবীর মশার লালার মাধ্যমে সুস্থ মানুষের শরীরে প্রবেশ করে ।
·
এই সুস্থ মানুষ পরবর্তী সময়ে ম্যালেরিয়া রোগী হয়ে যায়।
·
এভাবে মশা ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায়।
ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল কোনগুলো?
· বাংলাদেশে মোট ১৩ টি জেলার মধ্যে ম্যালেরিয়ার জন্য উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
· পৃথিবীর দরিদ্র দেশগুলোতে ম্যালেরিয়া রোগে মৃত্যুর হার অত্যধিক এবং বাংলাদেশ দরিদ্র দেশগুলোর একটি ।
· বাংলাদেশে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেশি মুলত পার্বত্য চট্রগ্রামের জেলাগুলোতে-
যেমন-বান্দরবান, রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়ি।
· চট্রগ্রাম ও কক্সবাজারের কিছু কিছু উপজেলাতে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ রয়েছে ।
· এছাড়া উত্তরপূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের কিছু কিছু জেলাতে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা যায়, যেমন- কুড়িগ্রাম, সিলেট, হবিগজ্ঞ, মৌলভীবাজার, সুনামগজ্ঞ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা এবং শেরপুর।
ম্যালেরিয়ার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী কারা?
(উচ্চমাত্রায় ম্যালেরিয়া রোগের আশষ্কা )
·
শিশু বিশেষত ৫ বছরের নিচে যাদের বয়স এবং ম্যালেরিয়ার প্রকোপ আছে এমন অঞ্চলে বসবাস করা।
·
গর্ভবর্তী মহিলা বিশেষত প্রথম সন্তানসম্ভবা।
·
কম ম্যালেরিয়া প্রকোপযুক্ত অঞ্চলে বসবাসকারী জনগষ্ঠী।
· ম্যালেরিয়া প্রকোপযুক্ত অঞ্চলে সাধারণত বসবাসরত জনগোষ্ঠী যারা ৬ মাস বা তার বেশি সময় যাবৎ কম ম্যালেরিয়া প্রকোপযুক্ত অঞ্চলে অবস্থান করে পুনরায় নিজেদের ম্যালেরিয়া প্রকোপ অঞ্চলে ফিরে আস।
উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ সময় কোনটি?
(উচ্চমাত্রায় ম্যালেরিয়া রোগের আশষ্কা)
·
আবহাওয়া বিবেচনা করলে এনোফিলিস মশা বছরের শেষ ভাগে, সেপ্টেম্বর ও নভেম্বর(মৌসুম পূর্ব) মাসের দিকে অধিক ম্যালেরিয়ার পরজীবী ছড়িয়ে থাকে।
·
কিছু মশা মৌসুমি বৃষ্টিকালীন সময়ে ম্যালেরিয়া ছড়ায়।(মার্চ-মে মাস)
· কোন কোন এনোফিলিস মশা মৌসুম উত্তর সময়েই বেশি পরজীবী ছড়িয়ে থাকে (জুন থেকে জুলাই মাস)।
ম্যালেরিয়া রোগে মানুষ কেন সাধারণত মৃত্যুবরণ করে?
·
সচেতনতার অভাব।
·
দেরিতে চিকিৎসা।
·
ভূল চিকিৎসা।
·
অবহেলা।
·
দুর্গম যোগাযোগব্যবস্থা।
·
ডাক্তারের অভাব।
0 comments:
Post a Comment