হঠাৎ ভারী বর্ষণ এবং বর্ষা
মৌসুমে মশার বংশবিস্তারের কারণে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি
পেতে পারে। এমতাবস্থায় ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগ বিষয়ে আগাম সতকর্তা এবং এডিস মশা নির্মূলে
প্রতিরোধ নেয়া অতীব জরুরী।
চিকনগুনিয়া (ইংরেজি ভাষায়: Chikungunya) হচ্ছে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশের দুই থেকে চার দিনের মধ্যে আকস্মিক জ্বর শুরু হয় এবং এর সাথে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা থাকে যা কয়েক সপ্তাহ মাস বা বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এই রোগে মৃত্যু ঝুঁকি প্রতি ১০০০০ হাজারে ০১ জন বা এর চেয়েও কম তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই রোগের জটিলতা তুলনামূলক বেশি হয়।
এই ভাইরাসটি মশার কামড়ের মাধ্যমে মানব শরীরে প্রবেশ করে। এডিস (Aedes) গণের দুটি প্রজাতি এডিস ইজিপ্টি ও এডিস অ্যালবপ্টিকাস এই ভাইরাসের বাহক হিসেবে পরিচিত। মানুষ ছাড়াও বানর পাখি তীক্ষ্ণ দন্ত প্রাণী যেমন ইঁদুরে এই ভাইরাসের জীবনচক্র বিদ্যমান। এখানেই ডেঙ্গু ভাইরাসের সাথে এর পার্থক্য কারণ ডেঙ্গু ভাইরাস শুধু স্তন্যপায়ীদের আক্রান্ত করে।
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া
কি?
- ভাইরাস জনিত রোগ যা এডিস মশা কামড়ে ছড়ায়,
- সাধরণ চিকৎসাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয় জ্বর ভালো হয়ে যায়, তবে হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বর ও ডেঙ্গু শক্ সিনড্রোম মারাত্মক হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও
করণীয়
- জ্বর ১০৪-১০৫º সে. , মাথা ব্যথা, মাংসপেশীতে, চোখের পিছনে ও হাড়ে প্রচন্ড ব্যথা চামড়ায় লালচে ছোপ (র্যাশ)
- রোগীকে প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খাওয়াতে হবে এবং মশারীর ভিতরে বিশ্রামে রাখতে হবে।
- জ্বরে শুধুমাত্র প্যারাসিটামল ব্যবহার করা যেতে পারে, কোনো অবস্থাতেই এসপিরিন, NSAID, জাতীয় ঔষধ সেবন করা যাবে না
- হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বর ও ডেঙ্গু শক্ সিনড্রোম হলে দাতের মাড়ি, নাক, মুখ ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্তপাত হতে পারে। সেক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে।
চিকুনগুনিয়া জ্বরের লক্ষণ
ও করণীয়
- এ রোগের লক্ষণ ডেঙ্গু রোগের মত। সাধারণতঃ চিকুনগুনিয়া রোগটি এমনি এমনিই সেরে যায়, তবে কখনো কখনো গিটের ব্যাথা কয়েক মাস এমনকি কয়েক বছরের বেশী সময় থাকতে পারে,
- গিটের ব্যাথার জন্য গিটের উপরে ঠান্ডা পানির শেক এবং হালকা ব্যায়াম উপকারী হতে পারে। প্রয়োজনে নিকটস্থ সরকারী স্বাস্থকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।
এডিস মশার বিশেষ বৈশিষ্ট্য
- এডিস মশা সাধারণত বাড়ির ভেতেরর ফুলে টব, এসি ও ফ্রিজের তলায় ও আশে-পাশে পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা জমাকৃত পানিতে ডিম পাড়ে।
- এ মশা সাধারণত দিনের বেলায়, সূর্যোদয়ের পর এবং সূর্যাস্তের পূর্বে কামড়ায়।
প্রতিরোধ
- মশার বিস্তার রোধে ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা এসি ও ফ্রিজের তলায় ইত্যাদিতে পানি জমতে দেয়া যাবে না ,
- বাড়ির আঙিনা, নির্মাণাধীন ভবনে পানির চৌবাচ্চা নিয়ামিত পরিষ্কার রাখতে হবে, দিনেও ঘুমানেরা সময় মশারী ব্যবহার করতে হবে।
ডেঙ্গু সচেতনতায় স্বাস্থ্য
বিভাগের করণীয়
- ডেঙ্গু বিষয়ে আগাম সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মশার বংশ বিস্তার প্রতিরোধে সকল স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ে কার্য্কর ব্যবস্থা গ্রহণ,
- জন-সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহন যেমন পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ, মাইকিং পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ইত্যাদি,
- সংশ্লিষ্ট বিভাগে (রাগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, সিডিসি ও আইইডিসিআর) নিয়মিত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর তথ্য প্রেরণ।
0 comments:
Post a Comment
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.