ঢেঁড়স বেশ পরিচিত একটি সবজি। সব বয়সীদের জন্য ঢেঁড়স খুব ভালো একটি সবজি। নারীর আঙুলের মতো দেখতে বলে ইংরেজিতে ঢেঁড়সকে লেডিস ফিঙ্গার (Ladies' Finger) বলা হয়। এর রয়েছে অনেক গুণ। ছোট বাচ্চা হতে বৃদ্ধ বয়সী সবার সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য এর গুনাগুন অপরিসীম।
ঢেঁড়সে
প্রতি ১০০ গ্রামে ভক্ষণযোগ্য অংশে আমিষ (১.৮ গ্রাম) ভিটামিন-সি (১৮
মিলিগ্রাম) খনিজ পদার্থ বিশেষ করে ক্যালশিয়াম (৯০ মিলিগ্রাম), লোহা (১
মিলিগ্রাম) ও আয়োডিন রয়েছে। এছাড়াও এতে রয়েছে ক্যারোটিন, ফলিক এসিড, থায়ামিন,
রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, অক্সালিক এসিড এবং অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড।
এর রিবোফ্লাভিনের পরিমাণ বেগুন, মূলা, টমেটো ও শিমের চেয়েও বেশি। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এটি খাওয়া ভালো।
নিম্নে ঢেঁড়সের বিস্ময়কর উপকারী ও ঔষধিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
এর রিবোফ্লাভিনের পরিমাণ বেগুন, মূলা, টমেটো ও শিমের চেয়েও বেশি। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এটি খাওয়া ভালো।
নিম্নে ঢেঁড়সের বিস্ময়কর উপকারী ও ঔষধিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
১. খুশকি ও উঁকুন রোধ: ঢেঁড়সে থাকা কিছু উপাদান চুলের কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। এ জন্য নিয়মিত ঢেঁড়স খেলে খুশকি ও উঁকুন রোধ করাসহ চুলকানি দূর করে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
২.ক্যান্সার প্রতিরোধ ও সুগার নিয়ন্ত্রণ: দেহের গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে রাখার উপাদান ছাড়াও ঢেঁড়সে রয়েছে ফাইবার বা আঁশ। এটা ত্বকের সমস্যা ও কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে বেশ কার্যকর। রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণেও এই খাবার বিশেষ উপযোগী।
৩. ফ্লেভনয়েড ও ভিটামিন সি: এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফ্লেভনয়েড ও ভিটামিন সি। এটা রক্তের ধমনি গঠনে সহায়তা করাসহ অ্যাজমার প্রকোপ কমায়।
৪. রক্ত জমাট সমস্যা রোধ: ঢেঁড়সে রয়েছে হিমোগ্লোবিন, আয়রন। এসব উপাদান দেহের রক্ত জমাট সমস্যা রোধ করে প্রয়োজনীয় লাল প্লাটিলেট তৈরি করে দেহের দুর্বলতা রোধ করে।
যাদের রক্তশূন্যতার সমস্যা রয়েছে, তাদের বেশি করে ঢেঁড়স খাওয়া উচিত।
৫. কম ক্যালরি: ঢেঁড়সে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম। তাই এটি ডায়েট মেন্যুতে অনায়াসেই রাখা যেতে পারে।
৬. হাড়ক্ষয় রোধ: এতে রয়েছে ভিটামিন ‘কে’ যা দেহের হাড়ের মজবুত গঠনে সহায়তা করে এবং অস্টিওপরোসিস বা হাড় ক্ষয় রোধে সহায়তা করে।
৭. কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রন: এতে থাকা ফাইবার ও পেকটিন দেহের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৮. দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়: ঢেঁড়সে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ লুটেইন ও বিটা ক্যারোটিন, যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে এ সংক্রান্ত সমস্যা থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া বেটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, লিউটিন; যা চোখের গ্লুকোমা, চোখের ছানি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৯. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: ব্লাড সুগার কমাতে এর উপকারীতা অনন্য। প্রতি ১০০ গ্রাম ঢেঁড়সে ০.০৭ মিলিগ্রাম থায়ামিন, ০.০৬
মিলিগ্রাম নিয়াসিন ও ০.০১ মিলিগ্রাম রিবোফ্লাভিন রয়েছে। যা ডায়াবেটিস রোগীর
স্নায়ুতন্ত্রে পুষ্টি সরবরাহ করে সতেজ রাখে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়
এটা রাখা উচিত।
১০. প্রোস্টেট গ্রন্থির অসুখে: এর
একটা দারুণ ঔষধিগুণ হলো এটি প্রস্রাবের প্রবাহ বৃদ্ধি করে। এতে প্রোস্টেট
গ্রন্থির বৃদ্ধিও কমে আসে। এটি পানিতে সেদ্ধ করে তরল পিচ্ছিল পদার্থ ছেঁকে
পান করলে প্রসাবের প্রবাহ বাড়বে।
১১. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। সহজে হজম হয় বলে বিপাকক্রিয়ায় সহায়তা করে।
১২. গর্ভাবস্থায় কাজ করে: এ সময় নিয়মিত ঢেঁড়স খেলে এর ফলেট উপাদানটি শিশুদের সঠিকভাবে বিকাশে সাহায্য করে এবং গর্ভবতী মাকে সুস্থ্য রাখে।
সুস্থ থাকতে তাই আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন ঢেঁড়স।
নিষেধাঙ্গা: অন্যান্য সবজির মতো এতেও
সামান্য পরিমাণে অক্সালিক এসিড রয়েছে। তাই কিডনিতে পাথর হলে এ সবজিটি এড়িয়ে
চলাই ভালো।
0 comments:
Post a Comment