শিরোনাম
Loading...
Thursday, February 8

Info Post


কমিউনিটি ক্লিনিক ও সিএইচসিপি এই দুটি নাম এখন স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে শুরু করে সর্বত্র আলোচিত এ পরিচিত। কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্ম ১৯৯৮ সালে হলেও সিএইচসিপিদের আবির্ভাব ২০১১ সালের শেষের দিকে। ২০১১ সালের আগে প্রায় ১৩টি বছর কমিউনিটি ক্লিনিক চালু ছিলো যদিও মধ্যখানে কিছু সময় বন্ধ ছিলো। পরিসংখ্যান দেখলে চিন্তা হয় ১১বছর কমিউনিটি ক্লিনিক কোথায় ছিলো!

২০১১সালের আগে কমিউনিটি ক্লিনিক ছিলো কিন্তু বর্তমান সময়ের মত এতোটা জনপ্রিয় ছিলোনা! জনগন কমিউনিটি ক্লিনিকের সাথে তেমন একটা সম্পৃক্তও ছিলোনা। ২০১১ সালে সিএইচসিপিদের নিয়োগের পর কমিউনিটি ক্লিনিক তার স্বরুপ ফিরে পায়, স্বাস্থ্য সেবায় অগ্রযাত্রার এক মহীসোপানে আরোহন করে এবং বর্তমান বিশ্বে স্বাস্থ্য সেবায় "রোল মডেল" খেতাব অর্জন করে।

আমি আমার সংক্ষিপ্ত আলোচনায় কমিউনিটি ক্লিনিকের সামান্য কিছু অর্জন তুলে ধরছি। প্রথমত যে বিষয়টি বলতে চাই, কমিউনিটি ক্লিনিক প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যারা সব সময় অবহেলিত এবং স্বাস্থ্য সেবার বাহিরে ছিলো তাদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেছে এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবায় তাদের প্রশিক্ষিত করেছে। শুধু এই বিষয়টি স্বীকার করলে কিংবা চিন্তা করলেই রাজস্বের জন্য সিএইচসিপিদের আন্দোলন করার প্রয়োজন ছিলোনা!

সেবা প্রদানঃ

এবার আসি মুল বিষয়ে। ২০১১ সাল থেকে ২০১৭ইং সাল পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিকে ৬০০ মিলিয়ন জন সাধারণ ভিজিট করেছে অর্থাৎ প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা গ্রহন করেছেন। গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ১  (এক) কোটিরও বেশি মানুষ স্বাস্থ্য সেবা নিয়েছেন যেখানে মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশু সেবাও রয়েছে।

নরমাল ডেলিভারীঃ

কমিউনিটি ক্লিনিক সাধারণ ও নিরাপদ প্রসব সেবার গ্রীন জোনে পরিনত হয়েছে। এই পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত মোট ১৯৩৫ জন মেয়ে সিএইচসিপি সিএসবিএ প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছেন এবং তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় কমিউনিটি ক্লিনিকে ৫০ হাজারেরও বেশি সাধারন নিরাপদ প্রসব পরিচালিত হয়েছে যেখানে সম্পুর্ণ বিনা পয়সায় এই সেবা দেয়া হয়েছে এবং কোন প্রকার অঘটন ছাড়াই এটা সম্ভব হয়েছে।

১২১৪টি সিসিতে ডেলিভারী সেবা চালু করা হয়েছে এবং মাত্র ১৮৪টি সিসিতে বার্থিং রুম বা ডেলিভারী রুম আছে। আর কমিউনিটি ক্লিনিকে ডেলিভারী চালু হয়েছে মাত্র কিছুদিন আগে!

রোগীর তথ্য সংরক্ষণ ও অনলাইন রিপোর্টিং:

বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সেবাগ্রহীতা বা রোগীদের অনলাইনে তথ্য সংরক্ষণ কমিউনিটি ক্লিনিক তথা সিএইচসিপিদের মাধ্যমে প্রথম শুরু হয়েছে। ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবার প্রথম স্বাক্ষর সিএইচসিপিরাই রেখেছে। মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশু স্বাস্থ্যের অনলাইনে তথ্য সংরক্ষনের পাশাপাশি নিয়মিত অনলাইন রিপোর্টিং করতে হয় সিএইচসিপিদের। নিম্নমানের ডিভাইস প্রদান, dhis2 সার্ভারের কোমা সংস্করণ ও নেটওয়ার্কের ধীরগতি সিএইচসিপিদের গত ছয়টি বছর কাজ করতে গিয়ে নিদারুন কষ্ট করতে হয়েছে এবং হচ্ছে।

কমিউনিটি ক্লিনিক এবং সিএইচসিপি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবায় অতুলনীয় অবদান রেখেছে অথচ এই সিএইচসিপিদের নিয়ে আজ কত রকমের ষড়যন্ত্র হচ্ছে! অন্যদের নিয়োগ দেয়ার কথাও মিডিয়া মারফত শুনেছি!

আমি সিএইচসিপিদের পক্ষ হয়ে জোর দাবী জানাচ্ছি তাদের প্রাণের দাবী রাজস্ব ঘোষনা সহ বেতন ভাতা বৃদ্ধি ও সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত পুর্বক কমিউনিটি ক্লিনিকে নির্বিঘ্নে কাজ করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। অন্যথায় তাদের অসামান্য অবদানের অস্বীকারের জন্য ইতিহাসের কাঠগড়ায় একদিন দাঁড়াতে হতে পারে।

আমার এই পোষ্টটি ইচ্ছে করলে সবাই তাদের টাইমলাইনে শেয়ার করতে পারেন। কপি না দিয়ে শেয়ার দিলে সংযোজন বিয়োজনে অটো আপডেট হয়ে যায়। তাই শেয়ার দেয়ার চেষ্টা করুন।

সবাইকে ধন্যবাদ।

মোহাম্মদ মীর হোসেন

0 comments:

Post a Comment