আজ বিশ্ব ঘুম দিবস।
স্বাস্থ্য
ঠিক রাখার অন্যতম শর্তের মধ্যে পড়ে স্বাস্থ্যকর ঘুম। মানে গভীর ঘুম। সুস্থ
জীবনযাপনের স্বার্থে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে এই দিনটিকে উদযাপন করা হয়। ২০০৮
সাল থেকে এই দিনটি পালিত হয়ে আসছে। তবে তারিখের হেরফের হয়ে থাকে।
শরীর সুস্থ রাখতে ও নানা
ধরনের অসুখ-বিসুখ থেকে নিজেদের দূরে রাখতে ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বলা হয়, প্রতিরাতে
৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে ধীরে ধীরে ক্ষয়ে আসবে জীবনীশক্তি। অনিদ্রার সঙ্গে বহু বড় রোগের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে যা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। তাই নিয়ম মেনে সঠিক সময়ে ঘুমনোর অভ্যাস সৃষ্টি করুন।
ঘুম না হলে স্ট্রেস বা স্নায়ু
চাপ ভর করবে, শারীরিক গঠন নষ্ট হবে, শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাঘাত ঘটবে এবং অস্বস্তিবোধ হবে।
তাই এখানে ভালো ঘুম সম্পর্কে কী করবেন এবং কী করবেন না তা সবিশেষ আলোচনা করা হল।
১.
শিশুর মতো ঘুম আসতে
ঘুমের আগে গভীরভাবে শ্বাস
টেনে নিন এবং শ্বাস ছেড়ে দিন। এতে যাবতীয় মানসিক ও শারীরিক চাপ ও দূর্বলতা কমে আসবে।
ঘুমের জন্যে দ্রুত প্রস্তুত হয়ে যাবে দেহ। আপনি টানা ৫ মিনিট ধরে হলকাভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের
এই প্রক্রিয়া অনুশীলন করতে পারেন। ঘুম আসবে শিশুর মতো।
২.
প্রযুক্তি হতে দূরে থাকুন
ঘুমের ঘণ্টাখানেক আগ থেকে
সব গেজেট থেকে মুক্তি নিতে হবে। স্মার্টফোন, ট্যাব, কম্পিউটার, টেলিভিশন বন্ধ করে দিন
কিংবা প্রয়োজনীয় গ্যাজেট খোলা রাখুন সঠিক দূরত্ব বজায় রেখে। ঘুমের জন্যে প্রস্তুতি
নিতে থাকুন। প্রযুক্তিযন্ত্র থেকে নীলআলো বা ব্ললাইট বেরিয়ে আসে যা মস্তিষ্ককে উত্তেজিত
করে। এতে ঘুম চলে যায়।
৩.
অন্ধকারে ঢেকে যাক শয়নকক্ষ
অনেকের আলো না নিভিয়ে ঘুমানোর
অভ্যাস রয়েছে যা মোটেই কাম্য নয়। এতে মস্তিস্কের উপর চাপ পড়ে- যা অনেক গবেষণায় প্রমানিত
হয়েছে। কেননা সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে এভাবেই সৃষ্টি করেছেন এবং আধার রাতকে করেছেন বিশ্রামের
জন্য। সুতরা আরামদায়ক ঘুমানোর জন্য শয়নকক্ষকে করে তুলুন সম্পূর্ণ আলো নিভিয়ে অন্ধকারময়।
৪.
সঙ্গীত থেরাপি
বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে হালকা
মেলোডি মিউজিক শুনতে পারেন। হালকা মেজাজের সঙ্গীত থেরাপির মতো কাজ করে। যেমন- পাখির
গান, জলপ্রপাতের শব্দ বা বনের শব্দ ইত্যাদি ঘুম আনে খুব দ্রুত।
৫.
সুন্দর পরিবেশে অভ্যস্ত থাকুন
সুন্দর অভ্যাসে মন দিতে হবে।
উত্তেজনাপূর্ণ উপন্যাস কিংবা ধুম ধাড়াক্কা সিনেমা দেখে কিন্তু ঘুমের আমেজ নষ্ট হয়ে
যায়। শান্তিপূর্ণ ঘুমের জন্যে দেহ-মনে শান্তি দরকার। ঘুমানোর জন্যে পরিবেশ দরকার। তাই
সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা বা মনটাকে হালকা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৬.
খাদ্যতালিকায় মনোযোগ দিন
খাদ্য তালিকা ঠিকঠাক করতে
হবে। রাতের খাবার হালকা হতে হবে পেটপুরে খাবেন না। এতে করে অস্বস্তিবোধ হয়। ক্যামোমাইল
চা কিংবা একমুঠো বাদাম খেয়ে নিতে পারেন।
৭.
ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলোন
প্রেরণাদায়ক মানসিকতা তৈরি
করুন। ঘুমের প্রস্তুতির আগে কয়েক মিনিট এ কাজে ব্যয় করবেন। মনে মনে কিছু ইতিবাচক কথা
বলুন। যেমন- আজ আমি গভীর ঘুম দেবো কিংবা নিরাপদে শান্তির বিশ্রাম দেবো নিজেকে।
৮.
চাপ চিহ্নিত করুন
হতে পারে আপনি নিদারুণ স্ট্রেস
এবং উদ্বেগ নিয়ে বিছানায় উঠেছেন। এ ধরনের অবস্থার আসল কারণ চিহ্নিত করতে হবে। কাজটা
একটু কঠিন হতে পারে। কিন্তু একবার বুঝে নিয়ে নিজেকে সামলে নেওয়া সহজ হবে। ঘুম আসবে
গভীর হয়ে।
৯.
বইপড়া ভালোবাসুন
ঘুমকে আরও উজ্জীবিত করতে
ঘুমানোর আগে আধাঘন্টার বই পড়ার অভ্যাস তৈরী করুন এতে ব্যস্ত জীবনে আপনার বই পড়ার অভ্যাসসহ
নতুন কিছু পেতে পারেন। যা ব্যক্তি, কর্ম ও
সামাজিক জীবনের আপনার সফলতার পথ সুগম করবে। জগৎ বিখ্যাত অনেক ব্যক্তিরই এই অভ্যাস রয়েছে।
১০.
পরামর্শ নিন
সবশেষের পরামর্শ হলো, যদি
সঠিকভাবে ঘুম না আসে বা ঘুমের সমস্যা দূর না হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
কিন্তু ঘুমকে কখনও অবহেলা করা যাবে না।
ঘুম দিবসে নিয়মিত গভীর ঘুম
হোক আপনার নিত্যদিনের সঙ্গী।
0 comments:
Post a Comment