আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় দেখা যায় যে অটিজম রয়েছে এমন শিশুদের ১০%-২০% শিশু ৪ থেকে ৬ বছর বয়সের মধ্যে মোটামুটি স্বাবলম্বী হতে পারে এবং সাধারণ স্কুলে স্বাভাবিক শিশুদের সাথে পড়ালেখা করতে পারে।
আরো
১০%-২০% শিশু স্বাভাবিক শিশুদের সাথে পড়ালেখা করতে পারে না, তারা বাসায় থাকে বা তাদের
জন্য প্রয়োজন হয় বিশেষায়িত স্কুল ও বিশেষ প্রশিক্ষণের, বিশেষায়িত স্কুলে পড়ে, ভাষাসহ
বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তারা সমাজে মোটমুটি স্বাভাবিক অবস্থান করে নেয়।
তবে
বাকি শিশুরা সব ধরণের সহায়তা পাওয়ার পরও স্বাধীনভাবে স্বাবলম্বী জীবন অতিবাহিত করতে
পারে না- তাদের জন্য প্রয়োজন হয় দীর্ঘ দিনের - প্রায় সারা জীবনের জন্য অন্যের উপর নির্ভরতা।
বিশেষ পরিচর্যার প্রয়োজন হয় তাদের।
৩টি বিষয়ের উপর লক্ষ্য রেখে
শিশুর অটিজমের ব্যবস্থা দেয়া হয়-
প্রথমত
অনাকাঙ্ক্ষিত
আচরণ পরিববর্তনের জন্য শিমুর বাবা মাকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন; যাতে তারা
বাড়িতে শিশুর আচরণগত পরিবর্তন আনতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন। শিশুর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের
দিকে মনোযোগ না দিয়ে কাঙ্ক্ষিত আচরণকে উৎসাহিত করতে হবে।
দ্বিতীয়ত
এসব
শিশুদের মূলধারার স্কুলে শিক্ষা প্রদান করতে হবে এবং প্রয়োজনবোধে বিশেষ সহায়তা প্রদান
করতে হবে। যে সমস্ত শিশু মূলধারার স্কুলে যেতে সক্ষম নয় তাদেরকে বিশেষায়িত স্কুলে শিক্ষার
ব্যবস্থা করতে হবে। যারা একবারেই স্কুলে যেতে অক্ষম তাদের জন্য বাড়িতে উপযোগী শিক্ষা
ও প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
তৃতীয়ত
ছোট
ছোট শব্দ দিয়ে তার ভাষার দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। তার সাথে স্বাভাবিকভাবে স্পষ্ট
করে কথা বলতে হ্েব। প্রয়োজনে তাকে ইশারা ইংগিতের মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে সাহয্য
করতে হবে এবং ইশারার তাৎপর্য বোঝাতে হবে। ছড়া কবিতা, দৈনন্দিন ব্যবহারিক জিনিসপত্রের
নাম, ছবির কার্ড ব্যবহার করা, গান, পাখির নাম, রঙের নাম, ফুলের নাম ইত্যাদি শেখাতে
হবে। শিশুকে কোনো শব্দ বিকৃত না করে শিখিয়ে প্রকৃত উচ্চারণ শেখাতে হবে।
স্পীচ-ল্যাঙ্গুয়েজ
থেরাপী ও অকুপেশনাল থেরাপী এবং আবেগ ও আচরণগত সদস্যার জন্য বিহেভিয়ার থেরাপী, সাইকোথেরাপির
প্রয়োগ করতে হবে।
কোনো
কোনো ক্ষেত্রে ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে - তবে তা অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ
অনুযায়ী হতে হবে। অটিজম এর সাথে কোনো ধরণের শারীরিক বা মানসিক সমস্যা থাকলে বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেগুলোর চিকিৎসাও গ্রহণ করতে হবে।
অটিজম
রয়েছে এমন শিশুদে রজন্য প্রয়োজন সর্বস্তরের সচেতনতা আর অটিজম নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন।
আর এই সচেতনতা ও পরিবর্তনের প্রথম ধাপটি শুরু করতে হবে পরিবার থেকেই। অটিজমের চিকিৎসায়
পরিবারের - বিশেষত বাবা মায়েদের ভূমিকা সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিশুর অটিজমকে গুরুত্বের
সাথে নিতে হবে, সেই সাথে নিতে হবে মানসিক প্রস্তুতি। অভিভাবকের ইতবাচক এবং গঠনমূলক
আচরণই পারে অটিজম আছে এমন শিশুর বিকাশের পথকে অনেকখানি স্বাভাবিক ও সাবলীল করতে।
কোথায় পাবেন বিশেষ সহায়তা
১. জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য
ইনস্টিটিউট
- শিশু মনোরোগ বিভাগ
- চাইল্ড গাইডেন্স ক্লিনিক
শেরে বাংলা নগর, ঢাকা।
২. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল
বিশ্ববিদ্যালয়
- ’সেন্টার ফর নিউরোডেভেলপমেন্ট এন্ড অটিজম ইন চিলড্রেন’ বিভাগ
·
মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, শাহবাগ, ঢাকা।
৩. জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন
ফাউন্ডেশন
- অটিজম রিসোর্স সেন্টার
মিরপুর, ঢাকা।
৪. শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
- শিশু বিকাশ কেন্দ্র
মাতুয়াইল, ঢাকা।
৫. ঢাকা মেডিকেল কলেজ
- শিশু বিভাগ
৬. ঢাকা শিশু হাসপাতাল
- শিশু বিকাশ কেন্দ্র
শ্যামলী, ঢাকা।
৭. সকল সরকারী মেডিকেল কলেজ
ও হাসপাতাল
- মানসিক রোগী বিভাগ
- শিশু বিভাগ
- শিশু বিকাশ কেন্দ্র
৮. সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল
- শিশু বিভাগ
- মানসিক রোগ বিভাগ
ঢাকা সেনানিবাস
৯. জাতীয় নিওরোমেডিকেল সায়েন্স
ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
শ্যমলী, ঢাকা
১০. সরকার অনুমোদিত বেসরকারী
প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও বিশেষায়িত স্কুলসমূহ
অটিজম সম্পর্কে আরও পড়ুন
0 comments:
Post a Comment