শিরোনাম
Loading...
Thursday, November 26

Info Post



Malaria Prevented Mosquito | ChcpBlog community clinic bangladesh
এখন পর্যন্ত ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। পৃথিবী থেকে ম্যালেরিয়াকে বিদায় জানাতে বহু গবেষণা হয়েছে। মশার বংশবৃদ্ধির হার কমিয়ে এনে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের এক নতুন অস্ত্র হাতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷ জিন কাঠামো বদলে দিয়ে তাঁরা এমন এক ধরনের মশা উদ্ভাবন করেছেন, যার বংশধরদের ৯৫ শতাংশই হবে পুরুষ৷

গবেষকরা বলছেন, সাধারণ মশার প্রজননের ক্ষেত্রে স্ত্রী ও পুরুষের সংখ্যা হয় প্রায় সমান সমান৷ গবেষণাগারে জন্ম নেয়া জেনেটিক্যালি মডিফায়েড (জিএম) মশা ৯৫ শতাংশ পুরুষ মশার জন্ম দিলে স্ত্রী মশার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে৷ তাতে এক পর্যায়ে মশার বংশবৃদ্ধি কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে৷ অন্যদিকে গবেষণাগারে যে কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে তা মাঠ পর্যায়ে কাজে আসলে মশার কামড়ে মানবদেহে ম্যালেরিয়ার পরজীবী ছড়িয়ে পড়া বন্ধে এটি হবে এক নতুন উপায়।

এই গবেষক দলের প্রধান লন্ডন ইমপেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক আন্দ্রেয়া ক্রিসান্তি বলেন, ‘‘নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হলে ম্যালেরিয়া ব্যাপক প্রাণহানির কারণ হতে পারে৷ এ কারণে আমাদের প্রায়ই নতুন নতুন কৌশল খুঁজতে হয়৷ এই প্রথম আমরা পরীক্ষাগারে জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে মশার বংশবৃদ্ধির হার কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি৷ ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে এটি হতে পারে একটি কার্যকর পদ্ধতি৷''

ম্যালেরিয়ার জীবাণু মানুষের দেহে ছড়ায় অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে৷ সারা বিশ্বে প্রায় তিনশ’ কোটি ২০ লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর এ রোগে ছয় লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়, যাদের অধিকাংশই আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের শিশু৷ 

দেখা গেছে, এক প্রজাতির মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ তৈরি করা হলে তা অন্য প্রজাতির ওপর কাজ করে না৷ আবার কীটনাশক ব্যবহারের কারণে অনেক এলাকায় মশার জিনবিন্যাস দ্রুত বদলে যায়৷ ফলে ওষুধেও আর মশা মরে না৷ এ সব কারণে মশা মারার বদলে এর বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের ওপরই জোর দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা৷

লন্ডন ইমপেরিয়াল কলেজের গবেষকরা গত ছয় বছর ধরে কাজ করছেন অ্যানোফিলিস গাম্বিয়া প্রজাতির মশা নিয়ে৷ এ প্রজাতির মশাই আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে ম্যালেরিয়া ছড়ানোর জন্য দায়ী৷

তাঁরা পুরুষ মশার ভ্রুণে বিশেষভাবে তৈরি ডিএনএ বসিয়ে দিয়েছেন যাতে প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় ওই মশার শুক্রাণুতে এক্স ক্রোমোজমের সংখ্যা কমে আসে৷ এতে করে ওই শুক্রাণু থেকে যেসব মশা হবে, তার বেশিরভাগই হবে পুরুষ৷

এ পদ্ধতির কার্যকারিতা দেখতে পাঁচটি বাক্সে ৫০টি করে পুরুষ জিএম মশা এবং ৫০টি স্বাভাবিক স্ত্রী মশা রাখা হয়৷ দেখা যায়, ছয় প্রজন্ম পর পাঁচটি খাঁচার মধ্যে চারটিতে মশার বংশ ধ্বংস হয়ে গেছে স্ত্রী মশার সংখ্যা কমে আসার কারণে৷ 

সম্প্রতি বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার কমিউনিকেশনস-এ মশা নিয়ে এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে৷ 

এর আগে ডেঙ্গি জ্বর প্রতিরোধেও জেনেটিক্যালি মডিফায়েড মশা ব্যবহার করা হয়েছিল, যাতে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই মশার মৃত্যু হয়৷ ব্রাজিল ও মালয়েশিয়া ইতোমধ্যে এ ধরনের জিএম মশা উন্মুক্ত করেছে৷ পানামাও আগামী জানুয়ারিতে এ পদ্ধতি ব্যবহার করবে বলে জানিয়েছে৷ 

এ গবেষণা বাস্তবায়িত হলে মানুষ আর ম্যালেরিয়ায় মরবে না। আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালে শুধুমাত্র আফ্রিকাতেই ৫ লাখ মানুষ মারা গেছেন ম্যালেরিয়ায়। এদের বেশিরভাগই শিশু।

0 comments:

Post a Comment

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.